ভারত বনাম পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের অতি উৎসাহী


ভারত ও পাকিস্থানে চলমান ইস্যু নিয়ে আমাদের দেশের মানুষদের অনলাইনে সরগরম অবস্থা। তাদের কেউ কেউ যেন নিজেরাই যুদ্ধে নেমেছেন, আবার কেউ কেউ এই যুদ্ধের জন্যে অপেক্ষা করছেন যুগ যুগান্তর ধরে। কেউ হয়ে উঠেছেন চিন্তাবিদ, সুশীল কিংবা অশ্লীল। তাদের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সালাহ উদ্দিন শুভ

ভারত ও পাকিপ্রেমীঃ ফেসবুকে স্বস্ব অবস্থান থেকে নিজের প্রেমময় দেশের হয়ে স্ট্যাটাস দিবে, একটা ভিডিও বা ছবি আপলোড করে খোঁচা মারা কিছু ক্যাপশন দিবে।

উদাহরনঃ এবার রুখে দাড়ালো দুরমুজ বাহিনী, পারলে ঠ্যাকা, কুপা কুপা।

ট্যালেন্টেড ভারত ও পাকিপ্রেমীঃ তারা সুশীল সাজার ভান করে নিজের প্রেমময় দেশের পক্ষ নিয়ে কিছু ইশারা ইঙ্গিত প্রদান করবে। কিন্তু ব্যালেন্স ঠিক রাখার জন্যে নিজের প্রেমময় দেশ সম্পর্কেও  দু-এক লাইন ব্যঞ্জনা গাইবে।

উদাহরণঃ কয়ের বাচ্চা ক, ক তুই মর, সবাই ক রে ধর তবে খ ও মাঝে মাঝে একটু হারামীগিরি করে।

ট্যালেন্টেড গুজব রটনাকারীঃ গুজব রটানো সম্পর্কে মানুষজন সচেতন হওয়ার কারনে তারা তাদের ট্যালেন্টকে কাজে লাগিয়ে গুজবের নিচে সুন্দরভাবে লাগিয়ে দেয়, 'সোর্সঃ বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, ইত্যাদি।

উদাহরণঃ কাশ্মীরের জাম্বুতে বডি স্প্রে নিক্ষেপে বেহুশ ৯০০। সোর্সঃ গুজব ডট টিভি।

কিউটের ডিব্বাঃ কতিপয় সোশ্যাল মিডিয়া কিউটের ডিব্বারা যুদ্ধের বিষয়বস্তু আগা মাথা কিছুই জানবেনা। শুধু তাদের ক্রাশ খাওয়া সেলিব্রেটিদের দেশ সাপোর্ট করবে।

উদাহরণঃ ওয়াও গোয়েলি এন্ড শালিক ইজ সো কিউট, আই সাপোর্ট বোথ। গো, উইন হ্যান্ডসাম।

মানবধিকার কর্মীঃ তারা এইসব হত্যা-রক্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করবে। মানবধিকার লঙ্গনের জন্যে মানবতাবিরোধী আইনের ধারা বিশ্লেষণ করবে।

উদাহরণঃ আহ, একটা মানুষ পুড়ে মরল বিমান দুর্ঘটনায়। কারো মনে কোন মায়াই নেই? এদিকে ৩০০জন মানুষকে হত্যা করল। জঙ্গী বলে কি তারা মানুষ নয়? কোথায় আজ মানবতা? আজগুবি আইনের খামোশ ধারায় বর্ননা করা আছে, যদি কোন ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীকে কেউ মেরে ফেলে তবে সেই ব্যাক্তিকে ফাঁশিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হবে। এহেম, এক্ষেত্রে ফাঁশিতে ঝুলানো কোন মানবধিকার লঙ্গন নয়।

জ্যোতিষীঃ এরা এখন ভবিষ্যৎবাণী করবে যুদ্ধের শেষ কোথায়, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি, কে জিতবে, ইত্যাদী।

উদাহরণঃ ২০২১ সালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হইবে আগেই কইছিলাম। এইতো মাত্র শুরু। এখন ড্রাম্প আর মতিনের দৃষ্টি পড়লেই শুরু হয়ে যাবে।

দেশপ্রেমিক ফেসবুক যোদ্ধাঃ এরা এই যুদ্ধের মাঝেও দেশকে টেনে নিয়ে আসবে। দেশের সম্পর্কে ভাববে, এবং দেশকেই শীর্ষে তুলে ধরবে।

উদাহরণঃ এই যুদ্ধের মাঝে বাংলাদেশ এখন ভারত ও পাকিস্থান উভয়কেই আক্রমন করে উভয়কেই হারিয়ে দিবে। এরপর বাংলাদেশ থেকে ভারতপ্রেমীদের ভারত পাঠিয়ে দেয়া হবে, পাকিস্থানপ্রেমীদের পাকিস্থানে পাঠিয়ে দেয়া হবে। আর রোহিঙ্গাদের পাঠিয়ে দেয়া হবে কাশ্মীরে। এরপর এদেশের মানুষরা সুখে ও শান্তিতে বসবাস করবে।


বিচ্ছু, যুগান্তর
সংখ্যা - ৭৩৭
১৭ মার্চ, ২০১৯

No comments:

Post a Comment